হার্ট বার্ন (বুকজ্বালা/গ্যাস)
মানুষের মুখগহবরের শেষ থেকে পাকস্থলি পর্যন্ত একটা নালি আছে যাকে ইছোফ্যাগাস বলে। পাকস্থলির লাইনিংয়ে এক ধরনের প্রটেক্টিভ সেল থাকে যা HCl এসিড ও গ্যাস্ট্রিক জুস থেকে পাকস্থলিতে ক্ষত (inflammation) হতে বাধা দেয়। কিন্তু ইছোফ্যাগাসে এই প্রোটেক্টিভ সেল না থাকায় যখন গ্যাস্ট্রিক জুস বা HCl এর আধিক্যের কারণে তা ইছোফ্যাগা্সে প্রবেশ করে তখন ইছোফ্যাগাসে ক্ষত হতে শুরু করে যেটাকে আমরা বুক জ্বালা বলে থাকি। মেডিকেলের ভাষায় একে GERD বলা হয়।
কারণঃ
প্রধানত খাবারের অনিয়মের কারণেই বুকজ্বালা হয়ে থাকে। তবে যে সব খাবার সরাসরি দায়ী তা হলো…
- দুধ চা, কফি
- শুকনা (পোড়া) মরিচের তরকারি বেশি খাওয়া
- অতিরিক্ত চর্বি ও মশলা যুক্ত খাবার খাওয়া
- কার্বোনেটেড ও এলকোহল যুক্ত পানীয় (কোল্ড ড্রিংস)
- ফ্রাইড ফুড, চকোলেট
- ধুমপান, মদ্যপান
- বাতরোগ সহ বিভিন্ন ব্যাথানাশক ঔষধ খাওয়া
এছাড়া গর্ভকালীন সময়ে এটা বেশি হতে পারে, হায়াটাস হার্নিয়ার কারনেও বুকজ্বালা হয়ে থাকে।
পাকস্থলির সমস্যা ছাড়া অন্য কারণেও বুক জ্বালা ও ব্যাথা হতে পারে যেমনঃ
- হার্ট এটাক
- পালমোনারি এমবোলিজম
- নিউমোনিয়া
- চেষ্ট ওয়াল পেইন
পরীক্ষাঃ
পাকস্থলি জনিত বুকজ্বালা কি না এটা যে পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝবেন তা হলো…
- Endoscopy
(তবে মধ্যবয়সী বা তার বেশি বয়সী রোগীর ক্ষেত্রে হার্টে/ফুসফুসের পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে, যদি সেই বিষয়ক কোনো লক্ষণ থাকে)
চিকিৎসা—
লাইফস্টাইল পরিবর্তনঃ বুকজ্বালা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য এটাই প্রধান চিকিৎসা।
যা যা করতে হবে……
- কম খাওয়া কিন্তু বারেবারে খাওয়া
- খাবার সময় বা খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথেই পানি পান করা যাবে না
- ঘুমানোর ঠিক পূর্ব মুহুর্তে না খাওয়া (কমপক্ষে ২/৩ ঘন্টা আগে খাওয়া)
- ঘুমানোর সময় মাথা বিছানা থেকে অনেকটা উচতে রাখা বা ২/৩ টা বালিশ ব্যবহার করা। ( খাওয়ার পর বিশ্রামের সময় বা যাদের আগে থেকেই সমস্যা বেশি আছে)
- ধুমপান সহ সকল প্রকার গ্যাস বৃদ্ধিকারী খাদ্য পরিহার করা।
যে খবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন–
- প্রচুর পরিমান সবুজ শাক সবজি,
- গাজর, শিম, আপেল, ব্রকলি,
- পরিমিত পরিমান পানি (ঘন ঘন, পরিমানে কম)
- আদার শরবত (আদা দিয়ে গরম পানি করে)
- দারচিনির গুড়া পানিতে মিশিয়ে (দ্রুত গ্যাস্ট্রিকের উপশম করে)
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা—
বুকজ্বালা করলেই এখন সবাই একটা গ্যাসের বড়ি খেয়ে নেয়, এভাবে কোনো নিয়ম কানুন ছাড়াই ঔষধ খাওয়ার কারনে সমস্যাগুলো আরো জটিল আকার ধারণ করছে (কারণ, সবাই যে ঔষধ কিনে খায় তা শুধুমাত্র গ্যাসের লক্ষণ কমায় কিন্তু মূল কারণ দূর করে না) । সাধারণ মানুষ মনে করে এটা নিরাময়যোগ্য রোগ না, সারাজীবন ধরেই ঔষধ খেতে হবে।
তবে হোমিওপ্যাথিতে এই সমস্যার সুন্দর সমাধান রয়েছে। একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি খাদ্যভ্যাসের কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললেই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
[vc_empty_space height="10px"]
For any kinds of physical problem contact with us or visit at our chamber.
[vc_empty_space height="15px"]
+8801816566944