ডেঙ্গু জ্বর এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
ডেঙ্গু মশা নামে পরিচিত ‘এডিস ইজিপ্টি’ নামক মশকীর কামরে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ঢাকা
শহরের মানুষ বেশি ঝুকিতে আছেন।
ডেঙ্গু জ্বরের স্টেজ/ধাপঃ
সধারনত ডেঙ্গু জরের ৩ টি স্টেজ থাকে।
১। প্রাথমিক স্টেজ
২। হেমোরেজিক স্টেজ
৩। ডেঙ্গু শক সিনড্রম।
প্রাথমিক স্টেজের লক্ষণঃ
১.প্রচন্ড জ্বর। এই জ্বর কয়েকদিন থেকে কমে যায়, আবার ২-৩ দিন পর আসে। জ্বরের এই ধরণটাকে biphasic fever বলে।
২.শরীরে প্রচন্ড ব্যাথা। মাংসপেশিতে ব্যাথা, মাথায় ব্যাথা, চোখের পিছোনে ব্যাথা, গিড়ায় গিড়ায় ব্যাথা, হাড্ডিতে ব্যাথা। ব্যাথার প্রচন্ডতার কারণে একে breakbone fever ও বলে।
৩. বমি বমি ভাব, বমি, শরীর দুর্বল লাগে।
৪. জ্বর আসার ২-৫ দিন পর গায়ে লাল লাল র্যাশ উঠে।
হেমোরেজিক (রক্তস্রাবী ডেঙ্গু) স্টেজের লক্ষণঃ
* নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া,
* রক্তবমি, রক্তকাশ বা পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া,
* মহিলাদের ক্ষেত্রে মাসিকে রক্ত বেশি যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
ডেঙ্গু শক সিনড্রমঃ (জটিলতা)
এ পর্যায়ে লক্ষণ গুলো আরো মারাত্বক হয়, যেমনঃ
* রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি।
* বিভিন্ন অঙ্গ থেকে (ইন্টার্নাল ব্লিডিং হতে পারে) পচুর রক্তপাত হওয়ার কারনে শরীর নিস্তেজ হয়ে পরা,
* ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির তীব্র পেটে ব্যাথা হয়।
* ঘন ঘন বমি ও অচেতন হয়ে পড়া।
* শরীর ঘর্মাক্ত ও ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
করণীয়ঃ
ডেঙ্গু জ্বর বুঝতে পারলেই
* পর্যাপ্ত পরিমান পানি খাওয়া
* খাবার স্যালাইন সরবরাহ করা
* ঘন ঘন রক্তচাপ পরীক্ষা করা
* বেশি ডিহাইড্রেশন হলে আইভি স্যালাইন পুস করা
* রোগীকে অবশ্যই মশারীর মধ্যে রাখা
* প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করা।
পরীক্ষা (ল্যাব টেস্ট):
CBC
NS1 Antigen test
রক্ত দেয়াঃ
ডেঙ্গু হেমোরেজিক হলে রোগীদের সাধারনত রক্তস্বল্পতা দেখা যায় এবং রক্তের প্লাটিলেটের পরিমান কমে যায়। এক্ষেত্রে রোগীর শরীরে রক্ত দিতে হতে পারে।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা;
ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা অনেকটাই কার্যকরী। রোগীর লক্ষণসমষ্টি অনুসারে বিভিন্ন মেডিসিন ব্যাবহৃত হতে পারে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ ইউপেটোরিয়াম পার্ফোলিয়েটাম, রাস টক্সিকোডেন্ড্রন, জেলসিমিয়াম, একোনাইট, বেলাডোনা, ব্রাইয়োনিয়া ইত্যাদি।
ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে সন্দেহ হলেই একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের স্বরণাপন্ন হয়ে সুচিকিৎসা গ্রহণ করুণ, তাহলে পরবর্তী জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।