logo [vc_empty_space height="10px"] For any kinds of physical problem contact with us or visit at our chamber. [vc_empty_space height="15px"] +8801816566944
[vc_empty_space height="5px"] info@drsofiqul.com
[vc_empty_space height="5px"] 70/B, East Panthpath, Dhaka
Instagram Feed
Search

কোলন ক্যান্সারে হোমিও চিকিৎসা

কোলন ক্যান্সার কোলনের বা মলাশয়, মলনালী, (বৃহদান্তের অংশ) বা অ্যাপেন্ডিক্সের অংশে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে কোষ বৃদ্ধি হয় তখন তাকে কোলন ক্যান্সার বা বৃহদান্ত্রের বা বাওয়েল বা অন্ত্রের ক্যান্সার বলে । মলাশয়ের মিউকোসাল এপিথেলিয়াম এ টিউমার বা পলিপ-ই পরবর্তীতে ক্যান্সার রুপ ধারন করে । সাধারণত চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়সী মানুষ এ রোগে আক্রান্ত বেশী হয় । তবে পুরুষ ও মহিলার আক্রান্তের হার ২ : ১। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ২১ জন পুরুষের ১ জন ও প্রতি ২৩ জন মহিলার ১ জন মহিলা কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় । মহিলাদের জন্য এটা ক্যান্সারে মৃত্যুর দ্বিতীয় লেভেলের কারণ আর পুরুষের ক্ষেত্রে কোলন ক্যান্সার ক্যান্সারে মৃত্যুর তৃতীয় পর্যায়ের কারণ । বেশিরভাগ মানুষ-ই প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ক্যান্সার ধরা না পড়ার কারনে মারা যায় ।

কাদের কোলন ক্যান্সার হতে পারে?

কোলন ক্যান্সার সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তি বা মহিলারাই বেশী আক্রান্ত হয়। উচ্চ প্রানিজ আমিষ, স্যাচুরেটেট ফ্যাট ও উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাবারে অভ্যস্ত ব্যাক্তি। কম ফাইবার যুক্ত খাবারে অভ্যস্ত ব্যাক্তি। অতিরিক্ত মদ্যপানে অভ্যস্ত ব্যাক্তি। ব্রেস্ট, ওভারি অথবা জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যাক্তি। বংশে কোলন ক্যান্সারের ইতিহাস আছে এমন ব্যাক্তি। আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রহন ডিজিস (Crohn’s disease) ও আই বি এস রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি। স্থুল শরীরের লোক, শারীরিক ব্যায়াম বা পরিশ্রম করে না এমন ব্যাক্তি। রেক্টামে বা কোলনে পলিপ আছে এমন ব্যক্তি এবং অতিরিক্ত গরুর মাংস খায় এমন ব্যাক্তি। পশ্চিমা বিশ্বে ৫০ বছরের উপরের বয়স্ক ব্যাক্তিদের শতকরা প্রায় ২ জন লোক কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।

কোলন ক্যান্সারের ধাপঃ

কোলন ক্যান্সারের মোট পাঁচটি ধাপ বা পর্যায় রয়েছে । ধাপগুলি হলঃ

পর্যায়-০:  এই ধাপে মলদ্বারের সংলগ্ন টিস্যু গুলিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় । একে ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায় বলা যায় ।

পর্যায়-১: এই ধাপে ক্যান্সার সেল মলদ্বারের উপরিস্থল ভেদ করে দ্বিতীয় স্তরে প্রবেশ করে ।

পর্যায়-২: এই ধাপে ক্যান্সার সেল মলদ্বারের পেশী পর্যন্ত পৌছায় কিন্তু মলদ্বারের লসিকা গ্রন্থি পর্যন্ত পৌছায় না।

পর্যায়-৩: এই ধাপে ক্যান্সার সেল লসিকা গ্রন্থি পর্যন্ত পৌছায় কিন্তু শরীরের অন্য অংশে তখনো পৌছায় না ।

পর্যায়-৪: এই ধাপে ক্যান্সার সেল শরীরের অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে । যেমন ক্যান্সার লিভার , জরায়ু, ফুসফুসে ছড়িয়ে পরে।

পুনঃ আক্রমনঃ কোলন ক্যান্সার সাধারণত চিকিৎসার পর পুনরায় আবার আক্রমন হয়। সাধারণত শতকরা চল্লিশ জন লোকের এই ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পরে এবং সাথে সাথে চিকিৎসা নিলে ভালো হয় ।

কোলন ক্যান্সারের লক্ষণঃ

কোলন ক্যান্সার হয়েছে এমন কিছু লক্ষণের মাধ্যমে আমরা প্রাথমিকভাবে আমরা ধারনা করতে পারি তার মধ্যে অন্যতম লক্ষণগুলি হলঃ

  • পায়খানার অভ্যাসগত পরিবর্তন ।
  • ঘন ঘন পাতলা পায়খানা অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেওয়া ।
  • পায়খানা করার পরও মনে হয় যেন পায়খানা পরিষ্কার হয় না ।
  • কাল বর্ণের পায়খানা হওয়া ।
  • পায়খানার রাস্তা দিয়ে তাজা লাল রক্ত ক্ষরন হওয়া ।
  • পেটে স্ফীত ও ব্যথা হওয়া ।
  • অল্প পরিমান খাবার গ্রহন তবুও পেট ভর্তি অনুভূত হওয়া ।
  • অবসাদ ও ক্লান্তবোধ হওয়া ।
  • পেটের মধ্যে চাকাবোধ অনুভূত হওয়া ।
  • পুরুষদের লৌহ ঘাটতি ও মহিলাদের মাসিক বন্ধ হওয়া ।

কোলন ক্যান্সারের পরীক্ষাঃ

যেসব টেস্টের মাধ্যমে আমরা রোগ নির্ণয় করতে পারি তা  হলঃ

১। অকাল্ট ব্লাড টেস্ট ।

২) পায়খানার ডি , এন , এ টেস্ট

৩) ফ্লেক্সিবল সিগ্ময়েডোস্কপি

৪) বেরিয়াম আনেমা এক্সরে

৫) কোলনোস্কপি

৬) সি টি স্ক্যান কোলনোস্কপি

৭) এম আর আই কোলন ইত্যাদি।

কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধঃ

১) পঞ্চাশ বছরের বেশি বয়সী ক্রহন ডিজিজ এ আক্রান্ত ও কোলন ক্যান্সার আছে এমন ব্যাক্তির নিয়মিত স্ক্রিনিং টেস্ট করাতে হবে ।

২) পুষ্টিকর খাবার , ফাইবার যুক্ত খাবার , হলুদ ও সবুজ ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া এবং সাথে ভালমানের তেল যেমনঃ আভোক্যাডো, অলিভ অয়েল, মাছের তেল, বাদাম ইত্যাদি নিয়মিত খাওয়া যায় ।

৩) নিয়মিত ও পরিমান মত ব্যায়াম কোলন ক্যান্সারের ঝুকি কমায়।

৪) অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে কোলন ক্যান্সারের ঝুকি কমানো যায়।

৫) নিয়মিত কফি পান ও ভিটামিন সি গ্রহনে কোলন ক্যান্সারের ঝুকি কমায়।

কোলন ক্যান্সারের চিকিৎসাঃ

সর্বশেষে চিকিৎসা নিয়ে আমরা বলতে পারি রোগীর কোলন ক্যান্সারের ধরন ও পর্যায় বা স্টেজ এর উপর এবং রোগির শারীরিক কাঠামোর উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা পদ্ধতির প্রয়োগ করা হয় । বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, ও সার্জারি করে চিকিৎসা করা হয়।

অপরপক্ষে বর্তমানে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতি হল সর্বাপেক্ষা সহজ, কষ্টবিহীন, বিনা সার্জারি ও কোনপ্রকার চিকিৎসা জটিলতা বিহীন, স্বল্পমূল্যে কম খরচে চিকিৎসা পদ্ধতি যা বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। শতকরা প্রায় ৪০ জন লোকেরই প্রাথমিক পর্যায়ে কোলন ক্যান্সার সনাক্ত করা সম্ভব হয়। প্রথমেই যদি অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার এর নিকট সঠিক চিকিৎসা নেয়া যায় কোলন ক্যান্সার ভাল হওয়া সম্ভব তবে চিকিৎসা দীর্ঘদিন হতে হবে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কোলন ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত রোগী যদি প্রথমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নেয় তাহলে বিনা কষ্টে শুধুমাত্র মুখে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে বেশিদিন বাঁচানো সম্ভব, কখনো কখনো একেবারে আরোগ্য  হতে দেখা গেছে ।

Leave a Comment